ধ্বনি পরিবর্তন PDF 2021।। বাংলা ব্যাকরণ ।। Dhoni poriborton.pdf
ধ্বনি পরিবর্তন.PDF ।।Dhoni poriborton.pdf || বাংলা ব্যাকরণ | Bengali grammar
![]() |
ধ্বনি পরিবর্তন.PDF ।।Dhoni poriborton.pdf || বাংলা ব্যাকরণ | Bengali grammar |
প্রিয়, ছাত্র-ছাত্রী
তোমাদের কাছে আজ শেয়ার করছি বাংলা ব্যাকরণ থেকে নির্বাচিত বিষয় ধ্বনি পরিরর্তন (PDF) যা খুব সহজ করে উদাহারন সহ আলোচনা করা হয়েছে , প্রতিটি বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে তুলে ধরা হয়েছে এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্রে এই গুলি বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ যেমন - SSC ,TET,WBCS... ect এবং তোমদের পরীক্ষার প্রস্তুতিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে যথেষ্ট সাহায্য করবে ।
তোমাদের সকলকে জানাই আমাদের পক্ষ থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ , তোমরা সর্বদা আমাদের পাশে থাকো এবং বন্ধুদের কাছে শেয়ার করো ও তোমাদের মতামত কমেন্ট করে আমাদেরকে জানাও।
নমুনা দেওয়া হলঃ
ধ্বনি পরিবর্তন
স্বরধ্বনি ঘটিত পরিবর্তন :
(১) স্বরভক্তি(similation) :
ছন্দ ও সুরের প্রয়োজনে অর্থাৎ চলিত ভাষায় সহজ করে উচ্চারণের
প্রবণতা থেকে সংযুক্ত ব্যঞ্জনকে ভেঙে তাঁর মাঝখানে স্বরধ্বনি আনয়নের রীতিকে ধ্বনিতত্ত্বে
স্বরভক্তি বা বিপ্রকর্ষ বা মধ্যস্বরাগম বলা হয় । উদাহরণ - ভকতি>ভক্তি(ভ্+অ+ক্+ত্+ই>ভ্+অ+ক্+অ+ত্+ই)।
‘ভক্তি’ শব্দের অর্থ
হল ‘বিভাজন’ । স্বরভক্তি শব্দের অর্থ হল ‘স্বর সহযোগে বিভাজন’ । ( ব্যাকরণে ধ্বনিতত্ত্বের
আলোচনা প্রসঙ্গে স্বরভক্তির আর যে যে প্রতিশব্দ ব্যবহার করা হয় তা হল মধ্যস্বরাগম ও
বিপ্রকর্ষ ।
➣ স্বরভক্তির প্রয়োজন :
i) উচ্চারণ প্রযত্ন লাঘব করার জন্য ।
ii) অনভ্যস্ত ধ্বনিগুলোকে সরল করার জন্য ।
iii) কবিতার ছন্দমাধুর্য ও সুর মাধুর্য রক্ষা করার
জন্য ।
iv) তৎসম ও বিদেশি
শব্দের যুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনিকে ভেঙে সহজ ও শ্রুতিমধুর
করার জন্য ।
বিপ্রকর্ষ : বিপ্রকর্ষ শব্দটির সাধারণ অর্থ দূরবর্তী
হওয়া । স্বরভক্তিতে সংযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনির মাঝখানে স্বরধ্বনি এসে ব্যবধান সৃষ্টি করে
বলে এর অপর নাম বিপ্রকর্ষ । বি-প্র-কৃষ্(বিশেষ রূপে প্রকৃষ্ঠভাবে সৌকর্ষ সৃষ্টি)।
বৈষ্ণব পদাবলী চন্ডীমঙ্গল,
মনসামঙ্গল, ময়মনসিংহ গীতিকা ও শ্রীকৃষ্ণ কীর্তনে স্বরভক্তির বহুল প্রয়োগ লক্ষকরা যায়
। দুটি উদাহরণ –
i) অমিয় সাগরে সিনান
করিতে সকলি গরল ভেল। (বৈ.প)
ii) কেনা বাঁশী বাএ বড়ায়ি চিত্তের হরিষে(শ্রীকৃষ্ণকীর্তন) ।
iii) তোহারি গরবে গরবিনী হাম । (বৈষ্ণব পদাবলী) ।
➪স্বরভক্তির দৃষ্টান্ত :
(ক) ‘অ’-এর আগম : কর্ম>করম, মর্ম>মরম, বর্ষ>বরষ, গর্ব>গরব,
প্রাণ>পরাণ, হর্ষ>হরষ, রত্ন>রতন, ধর্ম>ধরম, স্বপ্পন>স্বপন, জন্ম>জনম,
লগ্ন>লগন, মগ্ন>মগন, প্রসাদ>পরসসাদ, বর্ষিল>বরষিল, নির্জন>নিরজন, দর্শন>দরশন,
মূর্তি>মুরতি, চন্দ্র>চন্দর, নির্জন>নিরজন, গর্জন>গরজন, পূর্ব>পুরব,
সূর্য>সুরজ, ধৈর্য>ধৈরজ, প্রতাপ>পরতাপ, নির্মল>নিরমল, ভদ্র>ভদ্দর, মুক্তি>মুকতি,
নির্মিল>নিরমিল, ভক্তি>ভকতি, মুগ্ধ>মুগধ, লুব্ধ>লুবধ । মর্দ(ফা)>মরদ,
গার্ড্(ইং)>গারদ, শর্ম্(ফা)>শরম, নর্ম্(ফা)>নরম ইত্যাদি ।
(খ)‘ই’কারেরআগমঃপ্রীতি>পিরীতি,স্নান>সিনান,শ্রী>শিরি(বিপ্রকর্ষ)>ছিরি(উষ্মধ্বনি‘শ’>ঘৃষ্টধ্বনি‘শ’ঘৃষ্টিভবন),হর্ষ>হরিষ,মিত্র>মিত্তির,তৃপ্ত>তিরপিত,বর্ষণ>বরিষণ,ত্রিশ>তিরিশ,ফিক্র>ফিকির,জিক্র>জিকির,জিন্স্>জিনিস,ফিল্ম>ফিলিম,ক্লিপ>কিলিপ, নির্খ্>নিরিখ ।
(গ) ‘উ’ -কারের আগম : মুক্তা>মুকুতা, ভ্রূ>ভুরু, দুর্জন>দুরুজন, পদ্মিনী>পদুমিনি, পুত্র>পুত্তুর, শুদ্র>শুদ্দুর, রৌদ্র>রোদ্দুর, শুক্র>শুক্কুর, বুর্জ>বুরুজ, মুল্ক>মুলুক, ব্রুশ>বুরুশ, ব্লু>বুলু, দুর্যোগ>দুরুযোগ ।
(ঘ) ‘এ’-কারের আগম : ধ্যান>ধেয়ান, ব্যাকুল>বেয়াকুল, ভ্রম>ভেরম, গ্রাম>গেরাম, শ্রাদ্ধ>ছেরাদ্ধ, প্রণাম>পেরনাম, গ্লাস>গেলাস, ক্লাস>কেলাস, সির্ফ্>সেরেফ, প্রেগু>পেরেক, ব্ল্যাক>বেলাক, ট্রেন>টেরেন, ট্রাম>টেরাম ইত্যাদি ।
(ঙ) ‘অ’-কারের আগম : শ্লোক>শোলোক, চন্দ্র>চন্দোর, চক্র>চক্কোর, স্লো>সোলো, মুর্গ>মোরগ ।
(চ) ‘ঋ’-কার যুক্ত শব্দে : তৃপ্ত>তিরপিত, কৃপা>কিরিপা, সৃজিল>সিরজিল ।
(২) স্বরাগম (sound
addition) :
উচ্চারণের সুবিধার জন্য শব্দের প্রথমে, মাঝে কিংবা
শেষে স্বরধ্বনির আগম হলে, তাকে বলা হয় স্বরাগম । ‘স্বরাগম’(sound addition) তিন রীতিতে
হয় । তাই স্বরাগম তিন প্রকার –
(ক) আদি স্বরাগম ।
(খ) মধ্যস্বরাগম ।
(গ) অন্ত্যস্বরাগম ।
(গ) অ্যন্তস্বরাগম : যুক্তবর্ণের পরে শব্দের শেষে স্বরের আগম ঘটলে তাকে বলা হয় অন্ত্যস্বরাগম ।যেমন- ইঞ্চ>ইঞ্চি, বেঞ্চ>বিঞ্চি,ধন্য>ধন্যি, সত্য>সত্যি, পথ্য>পথ্যি, নস্য>নস্যি, গন্য>গন্যি,মান্য>মান্যি, চুল>চুলি, দুষ্ট>দুষ্টু, লিস্ট>লিস্টি, হাজির>হাজিরা, কড়া>কড়াই, জমাট>জমাটি ।
(৩) স্বরলোপ(Haplology) : উচ্চারণের বিবর্তনে যখন কোনো শব্দের আদিতে,
মধ্যে বা অন্তে স্বরধ্বনি লোপ পায়, তখন তাকে স্বরলোপ বলে ।
(ক) আদি স্বরলোপ
: শব্দের প্রথম স্বরধ্বনি লুপ্ত
হলে তাকে আদি স্বরলোপ বলে । যেমন – অলাবু>লাবু>লাউ, অপিধান>পিধান, অতসী>তিসি,
অভ্যন্তর>ভিতর,
আনোনা>নোনা, উদ্ধার>উধার>ধার, উড়ুম্বর>ডুমুর, অঝা>ঝা, আছিল>ছিল ইত্যাদি । এনোনা(পোর্তুগিজ)>নোনা ।
(খ) মধ্যস্বরলোপ : শব্দের মধ্যস্থ স্বরধ্বনি লোপ পেলে তাকে মধ্যস্বরলোপ বলে । নাতিনী>নাতনী, ভগিনি>ভগ্নি, জানালা>জানলা, গামোছা>গামছা, বসতি>বস্তি, কলিকাতা>কলকাতা, ডাকাইত>ডাকাত, সুবর্ণ>সর্ণ, তৈয়ারি>তৈরি ইত্যাদি ।
(গ) অন্ত্যস্বরলোপ : শব্দের শেষে স্বরধ্বনি লোপ পেলে তাকে
অন্ত্যস্বরলোপ বলে । যেমন- আজি>আজ, রাশি>রাশ, ফাঁসি>ফাঁস, হাতিশালা>হাতিশাল,
লজ্জা>লাজ, গঙ্গা>গাঙ, বন্যা>বান,সজ্জা>সাজ, পোকা>পোক, জোনাকি>জোনাক,
সন্ধ্যা>সাঁঝ, রাতি>রাত ইত্যাদি ।
বিপ্রকর্ষ ও সম্প্রকর্ষের তুলন : (i) উভয় পদ্ধতিই উচ্চারণের সরলীকান্ত দৃষ্টান্ত । (ii) বিপ্রকর্ষ সংযুক্তব্যঞ্জনকে ভেঙে মাঝে স্বরধ্বনি অনায়ন করে । যেমন - রত্ন>রতন, স্নাপ>সিনান । সম্প্রকর্ষ বিপ্রকর্ষের সম্পূর্ণ বিপরীত পদ্ধতি । এই পদ্ধতি শব্দমধ্যস্থ স্বরবর্ণের লোপ ঘটিয়ে দুইব্যঞ্জনকে নিকটবর্তী করে । যেমন-নাতিনি>নাতনী, বসতি>বস্তি ইত্যাদি ।
(4) অপনিহিতি(Epenthesis) :
অনেক সময় শব্দের মধ্যে ‘ই’-কার বা
‘উ’-কার থাকলে, সেটি যে ব্যঞ্জনের সঙ্গে যুক্ত আছে তাঁর পূর্বে এসে উচ্চারিত হয় । এছাড়া
শব্দে ‘য’-ফলা যুক্ত হয়ে ব্যঞ্জনা বা ‘ক্ষ’ বা ‘জ্ঞ’ থাকলে তাঁর আগে অনেকসময় একটা অতিরিক্ত
‘ই’ উচ্চারিত হয় । এই উভয় পক্রিয়াকে অপিনিহিতি
বলে । যেমন –
আজি>আইজ, (আ+জ্+ই>আ+ই+জ্),
সভ্য> সইভ্য, বক্ষ>বইক্ষ, জজ্ঞ>জইজ্ঞ, আজ্ঞা>আইজ্ঞা, মান্য>মাইন্য,
কাব্য>কাইব্য, কন্যা>কইন্যা, করিয়া>কইর্যা,
রাখিয়া>রাখিয়্যা, আশু>আউশ, সাধু>সাউধ, মাছুয়া>মাউছুয়া>মাউছা,রাতি>রাইত, কালি>কাইল, চারি>চাইর, গাঁঠি>গাঁইঠ, কাচি>কাঁইচি, গাঁতি>গাঁইতি কলিকাতা>কইলকাতা, নাটুয়া>নাউটুয়া,। সাথুয়া>সাউথুয়া, গাছয়া>গাউছয়া, জলুয়া>জউলুয়া, ভাতুয়া>ভাউতুয়া,নারিকেল>নাইরকল,চক্ষু>চউখ্, মাসুয়া>মাউসা, কার্য>কাইরয, জ্বালিয়া>জ্বাইল্যা, বানিয়া>বাইন্যা, মাটি>মাইট্যা, বাহ্য>বাইজ্ঝ প্রভৃতি ।
‘অপনিহিতি’
শব্দের অর্থ হল পূর্বে স্থাপন বা পূর্বে বসা । ( অপনিহিতির নামকরণ করেন ডঃ সুনীতিকুমার
চট্টোপাধ্যায় । বাংলায় বঙ্গালী উপভাষায় অপনিহিতির প্রাধ্যান্য পরিলক্ষিত হয় । ( কোচবিহার,
জলপাইগুরি, দক্ষিণচব্বিশ পরগনার অঞ্চল বিশেষে, বীরভূম ও পুরুলিয়ার ক্রিয়দংশে অপনিহিতির
প্রচলন লক্ষ করা যায় । অপনিহিতির বাক্যে প্রয়োগ –
(I) ‘কার সঙ্গে
দ্বন্দ্ব কইর্যা চক্ষু কইলা রাতা।’(চন্ডিমঙ্গল-মুকুন্দ চক্রবর্তী) ।
(ii) ‘তুমি হউ গহীন গাঙ্ আমি ডুইব্যা মরি।’ ময়মন সিংহ গীতিকা ।
(৫) অভিশ্রুতি(Vowel Mutation) :
অপিনিহিতি জাত ‘ই’-কার বা ‘উ’-কার সন্ধির বিশেষ নিয়মানুসারে যখন পূর্ববর্তী স্বরধ্বনির সঙ্গে মিলিত হয়ে রূপের পরিবর্তন ঘটায় তখন তাকে অভিশ্রুতি বলে।যেমনকরিয়া>কইরা(ই+অ্যা=এ)=করে,আসিয়া>আইস্যা>এসে,রাখিয়া>রাইখ্যা>রেখে,বানিয়া>বাইন্যা>বেনে,মাটিয়া>মাইত্যা>মেটে,ভাবিয়া>ভাইব্যা>ভেবে, বাদিয়া>বাইদ্যা>বেদে,কন্যা>কইন্যা>কনে, জালিয়া>জাইলা>জেলে, হারিয়া>হাইরয়া>হেরে, শুনিয়া>শুইন্যা>শুনে, চলিয়া>চইল্যা>চলে, ফিরিয়া>ফিইরয়া >ফিরে, জলুয়া>জউলা>জলো, মাসুয়া>মাউসা>মেসো, গাছুয়া>গাউছা>গেছে, পড়ুয়া>পইড়া>পড়ো, মাঠুয়া>মাউঠা>মেঠো, বাতুয়া> বাউতা>বেতো, কালুয়া>কাউলা>কেলো, মাছুয়া>মাউছা>মেছো, পটুয়া>পউটা>পোটো ইত্যাদি ।
File Details:
বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো :